add

ভয়ানক আনন্দ-Boyanok Anondho

ভয়ানক আনন্দ-ইয়াছিন জাইদ

ভয়ানক আনন্দ
ভয়ানক আনন্দ


আমার চরিত্রের বিশেষ গুনগুলোর মধ্যে একটি গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকা। আর সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে মধ্যেরাতে নির্জন জায়গায় একা বসে থাকা।তবে নির্জনতম জায়গাগুলোর মধ্য আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা আমার এলাকার ছোট একটি হাসপাতাল মাঠ। 

হাসপাতালটি আমার বাড়ী থেকে বেশি দূরে নয়,যেতে প্রায় পাঁচ-ছয় মিনিট এর মতো লাগে।সারাদিন সন্ধারাতে অনেকে এসে এখানে আড্ডা দেয়,তবে রাত গভীর হতে থাকলেই নির্জন হতে থাকে জায়গাটি।রাত দশটার পর আর কাউকে দেখতে পাওয়া যায়না।

বেশ কয়েকদিন হলো মানসিক টেনশনে ভুগছি।সারাদিন বন্ধুদের সাথে হাসাহাসি আড্ডা দিয়েই দিন কেটে যায়,সারাদিন তেমন কিছুই বুঝতে পারিনা।তবে রাত যতো গভীর হতে থাকে ততই মানসিক যন্ত্রণা বেড়ে যায়,নিজেকে খুব একা মনে হয়।সকাল থেকে সারাদিন গুরি গুরি বৃষ্টি হচ্ছে, বাহিরে যাওয়া হয়নি।ইন্টারনেট ব্রাউজিং করেই কেটে গেছে সারাটা দিন।মাগরিবের নামাজ পড়েই শুয়ে পড়েছি।কখন যে ঘুমের দেশে হারিয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি।

হঠাৎ করে মধ্যে রাতে ঘুমটা ভেঙে যায়, তখন আনুমানিক রাত ১ টা বাজে।কেমন জানি অনুভব করছি।ঘুমানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।তাই কোন কিছুই না ভেবে মধ্যে রাতে বেরিয়ে যাই হাসপাতালের দিকে।হাসপাতালের আমার সেই প্রিয় জায়গাটায় গিয়ে বসে পড়ি।

হাসপাতালের উওর পার্শ্বে আমাদের বাড়ী।বাড়ীর দক্ষিণ পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল বড় একটা শিমুল গাছ। আর তার এক পাশে রয়েছে বাঁশ ঝাড়। শিমুল আর বাঁশ ঝাড় সম্পর্কে মানুষের মুখে অনেক রকমের ভয়ানক গল্প শোনা যায়।আরো কিছু গাছ তেঁতুল, বট ছাড়াও উঁচু যেকোন প্রশিদ্ধ গাছ।এগুলোতে নাকি ভুতেরা বাসা বানায়।তবে আমি যেখানে বসে আছি সে জায়গাটা নিয়েও অদ্ভুদ ভূতের গল্প শোনা যায়।তেমনি একটি গল্প আছে....

এক লোক গভীর রাতে এখানে দিয়ে যাচ্ছিল।রাত তখন আনুমানিক ২ টা কিংবা ৩ টা। লোকটি যখন হাসপাতালের কাছে চলে আসে,ঠিক তখন হঠাৎ করে কোথা থেকে যেন একটা কালো বিড়াল আর একটা সাদা বিড়াল রাস্তায় মাঝখানে ঝগড়া বেঁধে দেয়।তখন কিন্তু হাসপাতাল ছিলোনা,রাস্তা-ঘাট তেমন ভালো ছিলোনা,ছোট একটা মেঠো পথ।

বিড়ালগুলে একটার পর একটা ঝাঁপিয়ে পড়ছে হিংস্ত গতিতে,আর ভয়ানক গলায় চেঁচাচ্ছে রাস্তা থেকে কিছুতেই সরছে না।বিড়ালগুলো দেখতে সাধারণত বিড়ালগুলো থেকে আলাদা,সাইজে অনেকটা বড়।তাদের চোখগুলো লাল যেন আগুনের পিন্ড। লোকটা ভয় পেয়ে গলো।যদিও সে এই এলাকার বিষয়ে কিছু জানেনা।জানলে হয়তো সে এতো রাতে এদিকে আসতো না।লোকটি ভয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেনা আবার পিছিয়েও যাচ্ছেনা।

ঝগড়ার এক পর্যায়ে বিড়াল দুটো গড়িয়ে রাস্তায় এক পাশে পড়ে যায়।ভয় পেয়ে লোকটা দৌড়ে কোন এক বাড়ির দিকে যেতে লাগলো।তখন সে অনভুব করলো কে যেন তাকে পিছন থেকে ডাকছে,ফিরে দেখে কেউ নেই।হঠাৎ উপর দিকে চোখ পড়তেই দেখে বাঁশ ঝাড়ের উপর জ্বল-জ্বল করে আগুন জ্বলছে  আর ধরে ধীরে সেটা নিচের দিকে নামছে।হঠাৎ চোখ পরতেই দেখে শিমুল গাছের উপর দুটো লোক ঝুলছে আর ভয়ানক ভাবে হাসছে।লোকটার হাত পা যেন অবস হয়ে যাচ্ছে। দরদর করে শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে।

আমাদের বাড়ি যেহেতু কাছেই ছিলো তাই কোন রকম দৌঁড়ে এসে আমাদের বাড়িতেই ডুকে পড়লো।কোন এক ঘরের দরজা আঘাত কয়েকবার আঘাত করেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।

গল্পটার সময়কাল আমার জন্মের বহুবছর আগে।এরকম ছোট-বড় অনেক অনেক গল্প আছে জায়গাটা নিয়ে। আমার কাছে এসব গল্পশুনে হাসি পায়।যদিও এলাকার লোকেরা নিছক গল্প বলে মানতে নারাজ। তাদের বিশ্বাস সবাই সত্য।
তেমনি আমার নিজেরও একটা গল্প আছে।

জ্যোঁসনা ছিলো মৃদু।তারিখটা কতো জানা নেই।রাতটা পৃণিমার ছিলোনা,তবুও যেন আকাশে একটা বাকা চাঁদ উঁঠেছে।সারাদিন বৃষ্টি হওয়ার পর অনেকটা ঠান্ডা অনুভব করছি।রাত তখন প্রায় দুইটা বাজে।হঠাৎ আমি লক্ষ্য করলাম আমার থেকে কিছুটা দূরে অস্বাভাবিক দুটো লোক বসে আছে।লোক দুটো দুইটার বিপরীত। একটা অনেক লম্বা এবং ধবধবে সাদা,আরেকটা অনেক কালো এবং খাটো।এমন লোক জন্মেও দেখিনি।হঠাৎ দেখে মনে হবে যেন সাদা লোকটা কারেন্টের খুঁটি আর কালো লোকটা সবুজ পাহাড়ের কালো ভাল্লুক।প্রথম দেখে যে কারো মনে ভয়ের শিহরণ ধরিয়ে দিতে সক্ষম। বলা বাহুল্য যে আমার মতো বুদ্ধিহীন পাগলেরা কোন কিছুতেই ভয় পায়না।

আমি বিষ্ময় চোখে তাকিয়ে রইলাম লোক দুটোর দিকে। লোকদুটো আমাকে কোন বিরক্ত করছে না,নিরস মুখে বসে আছে।মনে মনে কি যেন ভাবছে কে জানে।

আমি কি যেন মনে করে পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করলাম। ইচ্ছে করলো তাদের ছবি তুলে রাকি।মনের ভিতর সন্দেহ সৃষ্টি হলো,কে জানে তারা আবার নেশা খোর বা অন্য কিছু হয়।আমাদের এলাকা আবার নেশার জন্য অনেক নাম ডাক আছে।এলাকার কিছু প্রভাবশালী নেশা বিক্রি করে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে এলাকার ছেলেদের। তাদের কথা নাই বা বলি।

মোবাইলের ক্যামেরা অন করে লোকদুটোর দিকে ফোকাস করলাম,লোকদুটো হালকা দেখা যাচ্ছে স্কিনে,ফ্লাশ মারলে হয়তো ভালো দেখা যাবে।শুধু একটা ক্লিক এর অপেক্ষা, হঠাৎ ফোনটা ব্যাটারি লো দেখিয়ে তৎক্ষাত বন্ধ হয়ে গেলো,ফোনটা আর অন হলোনা।আসফোসের আর সীমা রইলোনা।ইচ্ছে করছিলো ফোনটা আছাড় মেরে ভেঙে ফেলি।রাগ কমিয়ে ফোনটা পকেটে রাখলাম। 

লোক দুটোকে এরকম বিরস মুখে বসে থাকতে দেখে আমার ভালো লাগছেনা।দেখি লোকগুলো কারা তাদের সাথে কি কথা বলা যায়না? আমি কিছু না ভেবেই বললাম কে আপনারা?কোথায় থেকে এসেছেন?তারা কোন উওর দিলোনা।তারা একে অন্যর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।আমি একটু রাগি মাথায় বললাম কথা বলছেন না কেন?সমস্যা কি?তারা হাত নারিয়ে কি যে বুঝালো,আমার আর বুঝার বাকি রইলোনা।তারা দুজন বাক প্রতিবন্ধি তারা হাত নারিয়ে আমাকে কিছু বুঝাতে চাইছে,কি বুঝলাম নিজেও জানিনা।ধরে নিলাম তারা আমার সাথে আড্ডা দিবে।আমার তাদের সাথে গল্প করতেও মন চাচ্ছে। তাদের বললাম আমার একটা গল্প আছে শুনবেন?গল্পটা কিন্তু অনেক ভয়ানক।তারা কি যেন বুঝাতে চাইলো,আমি ধরেই নিলাম তারা গল্পটা শুনবে।

হঠাৎ করে আমার এলাকার এক ছোট ভাই কোথায় থেকে যেন এসে আমাদের সাথে যোগ দিলো,সে কোন কথা না বলেই বসে পড়লো।আড্ডা জমে গেলো,গল্পটা বলতে শুরু করলাম....

একদিন ঘন অন্ধকারাছন্ন রাতে একাকি হেঁটে বাসায় ফিরছি।রাত বাজে প্রায় ২ টা।সদারচর এতো রাতে বাসায় ফরিনা।আজ হঠাৎ করে তীব্র আকারে বৃষ্টির কারনে বাজারে আটকে পড়ে আছি।বৃষ্টি এখনো পুরোপুরি থামেনি ঝিরঝির করে পড়ছে।সাথে হালকা ঝড়ো বাতাস।নিরব নিস্তব্ধ, চারপাশে এক অদ্ভুদ আভা অনুভব করছি।মনের মধ্যে কিছুটা ভয়ও করছে।পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে টানতে শুরু করলাম।ভুতেরা নাকি আবার আগুন দেখে ভয় পায়।হা হা ভুতেরাও নাকি ভয় পায়,ভাবতেই হাসি পাচ্ছে। সামনের দিকে ভয়ে আবারো চুপছে যায়।আমার থেকে কিছুটা দুরে একটা বাঁশের ঝাড়, আবার কিছুটা সামনে বড় ঝোঁপ ঝাড়।

এলাকায় মুরুব্বিদের কাছে থেকে শুনা যেতো জায়গাটা নাকি ভয়ানক। এখানে নাকি ভুতেরা বসবাস করে।রাতের বেলায় বহু রুপ ধরে মানুষের সামনে আসে।অবশ্য এর কিছু দৃষ্টান্ত প্রমানও রয়েছে। আমাদের এলাকার এক মধ্যে বয়সী লোক ওই জায়গাতে একদিন রাতে ভুল করে এক কুকুরের উপর সাইকেল চালিয়ে দেয়।কুকুরটি নাকি ভুত ছিলো।সেদিনের পর থেকেই সে এখন পাগল হয়ে বসে আছপ।আর আমাদের বাড়ির পাশের এক চাচার সামনে নাকি,আকাশ থেকে জমিন পযর্ন্ত বিশার আকৃতির রুপ ধরে পথ আটকে দাঁড়াই ছিলো।মুহুর্তে বিকট চিৎকার শুনে লোকজন এসে দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।বহু কবিরাজ গুলে খাওয়ার পর সে সুস্থ হয়।আরো অনেক ছোটো বড় কাহিনী আছে।ব্যাগেন শুনলে আন্যেগোর হার্ট এটাক হইবো।এসব ভাবতে ভাবতে অনবরর্ত হেঁটে চলছি।

বাঁশের ঝাঁড়ের কাছে আসতেই বাঁশ ভাঙ্গার শব্দ হলো।সাথে সাথে ভিতরটা মুচড়ে উঠলো।দূত গতিতে পা চালালাম, হাঁটছি না তো যেন দৌড়াচ্ছি। হঠাৎ করে কোথা থেকে যেন একদল মুরগির বাচ্চা এসে পুরো রাস্তা দখল করে নিলো।বাচ্চার গুলোর গায়ের রং সাদা,বেশ সুন্দর ও বটে।রাস্তায় কি যে খাচ্ছে। চোখে মনে হয় সরিষার ফুল দেখছি,এতো রাতে মুরগির বাচ্চা আসবে কোথা থেকে?কি জানি কি ভেবে কাছে গিয়ে ধরতে চাইলাম, কিন্তু কিছুতেই ধরতে পারলাম না।যতো বার ধরতে যাই কোথায় যেন হারিয়ে যায়।

তারপর আবার একই জায়গায় চলে আসে।আমার বুঝতে বাকি রইলোনা না।ভূতেরা মুরগীর বাচ্চার রুপ ধরে আইছে।ভয়ে আমার হাত পা শীতল হতে শুরু করলো।আজইকা আমারে খাইছে।জীবনে আর কারো সাথে দুষ্টুমি,কারো পেছনে বাঁশ দিমুনা,মাফ কইরা দে আমারে,এবারের মতো যাইতে দেন।কিন্তু হেতেরা তো আমার কথা শুনলোই না।কি যে করি,ভাবতে ভাবতে হুজুরের কথা মনে পড়ল।হুজুর একদিন বলেছিলো,ভুত পেত দেখলে আয়াতুল কুরসি পড়তে,সঙ্গে সঙ্গে চোক বন্ধ করে আয়াতুল কুরসি পড়া শুরু করলাম। হুজুরের কথায় কাজ হয়েছে।আল্লাহ্ বলতে বলতে সেখান থেকে চলে আসলাম।এতো ঠান্ডার মধ্যেও আমার শরীরটা ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। বুকটা ধুব-ধুব করে কাপছে।নিজেকে স্বাভাবিক করে আবার হাঁটা শুরু করলাম।

কবরস্থানের পাশ দিয়েই রাস্তা, এই রাস্তা দিয়েই আমাদের বাড়ি যেতে হয়।কবরস্থানের বিপরীত  পার্শ্বে ঘন গাছ ঘেরা জঙ্গল। দিনের বেলায় ও জঙ্গলে অন্ধকার মনে হয়।ক'দিন আগে ঔ জঙ্গলে আমাদের এলাকার এক মেয়ে গাছের সাথে ফাঁস দিয়ে ঝুলে ছিলো।বাগান আর কবরস্থানের মাঝে আসতেই মনে হলো, পিছন থেকে কেউ আমার কাঁধে হাত রাখলো।ভয়ে ভুত বলে চিৎকার দিয়ে যেইবা দৌঁড় দিলাম,ওমনি ভারি কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়ে ফুটবলের মতো ধুম করে মাটিতে পড়ে গেলাম। তারপর আর কিছুই মনে নেই।চোখ খুলে দেখি বিছানায় শুয়ে আছি।পাশে আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশীরা দাঁড়িয়ে আছে।কি ভয়ানক রাতটাই না ছিল… 

হঠাৎ করে লোক দুটোর দিকে তাকিয়ে দেখি,মনে হয় তারা আমার গল্প শুনে বিরক্তই।তবুও তাদের জিজ্ঞেস করলাম, গল্প শুনে ভয় পেয়েছেন?কি যেন বুঝালো কিছুই বুঝালাম না।একটু পর বুঝতে পারলাম তারা আমাকে গান গাইতে বলছে।আমার হাসি পাচ্ছিলো মনে মনে।আমি গান পারিনা,তবুও কেন জানি গান গাইতে ইচ্ছে করছে।চার্জের অভাবে মোবাইল ফোন ও বন্ধ হয়ে গেছে।মোবাইল থেকে গান ছাড়বো সেই উপায়ও নেই।রাত কয়টা বাজে সেটাও দেখতে পারছিনা।তাদের সাথে সময়টা ভালোই কাটলো।কতোদিন পর এমন আড্ডা হলো মনে নেই।

অবশেষে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে বাড়ি ফিরলাম। মানুষ দুটো স্হির হয়ে সেখানেই বসে আছে।কি যে বলছে আর হাঁসছে।
আমি বাড়ি ফিরে মোবাইল চার্জ দিতেই অবাক হয়ে যাই।মোবাইলে এখনো দিব্বি খোলা আছে।চার্জও ৫০% এর উপরে।তখন মোবাইলে কি হয়েছিল? লোট দুটো কে?আমার সেই ছোট ভাইতো ৫ বছর আগেই মারা গেছে।সে কিভাবে আমাদের সাথে আড্ডা দিলো?কাদেরকে আমি ভূতের গল্প শুনালাম? এতো সময় কাদের সাথে আড্ডা দিলাম? নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করছি।মাথাটা ভয়ে ঝিম -ঝিম করে উঠলো।কেনই বা তারা আমার সাথে আড্ডা দিলো?বিছানায় শুয়ে ভাবতে ভাবতে দুচোখ ঘুমে বন্ধ হয়ে আসছে।
অতঃপর গভীর ঘুৃম…
…সমাপ্ত…
(সংক্ষিপ্ত) 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url